ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেপ সমস্ত কাগজ।
আমি বাজে ছেলে, আমি লাস্ট বেঞ্চ, আমি পারবো না!
ক্ষমা করবেন বৃক্ষ, আপনার শাখায় আমি সত্য পাখি বসাতে পারবো না!
–কবি আবুল হাসান

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আবুল হাসান-এর জীবনীভিত্তিক ডকু-ফিকশন ‘ঝিনুক নীরবে সহো’৷ মোশতাক আহমদ রচিত বইটি প্রকাশ করেছে পেণ্ডুলাম প্রকাশনী৷ প্রচ্ছদ করেছেন রাজীব দত্ত৷ ৩২০ পৃষ্ঠার এ বইটির মূল্য ৬৪০ টাকা৷

বইটি সম্পর্কে কথাসাহিত্যিক জাকির তালুকদার অনলাইনে লিখেছেন,
এই বইয়ের প্রথম বাক্যটিই পাঠককে ডেকে নেবে বিষণ্ণ গীতল এক জগতে, যেখান থেকে পাঠক আর বেরুতে পারবেন না সমাপ্তিতে না পৌঁছে। বিশেষ করে সেই পাঠক নিজেও যদি হন কবিতাগ্রস্ত, রোমান্টিক বিষণ্ণতায় আক্রান্ত, জীবনযাপনের সাথে যিনি খুঁজে পাচ্ছেন না কবিতার সহাবস্থান, তাহলে তার জন্য এই গ্রন্থটি জাদুকরী এক সম্মোহন। সেইসাথে সেই মানুষরাও, শিল্প-সংস্কৃতির সাথে যাদের সামান্যতম সংস্রবও আছে, তারা পাবেন নিজের জীবনের গোপন দীর্ঘশ্বাসগুলোর সাথে সম্পৃক্তি। কারণ এই ডকু-ফিকশনের কেন্দ্র-চরিত্র বাংলাদেশের আধুনিক কবিতার সবচাইতে স্পর্শকাতর, সংবেদনশীল, সুদীর্ঘ স্বপ্নদেখা অথচ ক্ষীণায়ু জীবনের এক কবিকে নিয়ে, যার নাম আবুল হাসান।

প্রচ্ছদশিল্পী রাজীব দত্ত
মোশতাক আহমদ এই ডকু-ফিকশন শুরু করেছেন পিজি হাসপাতালে কবির মৃত্যুদৃশ্য দিয়ে। শেষ হয়েছে জানাজা আর বনানী কবরস্থানে সমাহিত করার বিষণ্ণ, করুণ, হৃদয়স্পর্শী বর্ণনার মাধ্যমে।

তবে এই ডকু-ফিকশনে কেবল আবুল হাসানই উপস্থিত আছেন এমন নয়৷ বরং সেই সময়কালের সকল প্রবীণ-তরুণ কবি-সাহিত্যিক। সিকান্দার আবু জাফর, শওকত ওসমান, শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী, আল মাহমুদ, সৈয়দ শামসুল হক, আহমদ ছফা, মাহমুদুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, জাহিদুল হক, আবিদ আজাদ, জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, পূরবী বসু, শাহাদত চৌধুরীসহ সেই সময়কালের ছোট কিন্তু সমৃদ্ধ সাহিত্যজগত। আর বিপুল জীবন্ত উপস্থিতি আছে ঢাকা শহরের, যা কারো কাছে হৃদয়হীন কংক্রিটের জনপদ, কারো কাছে কবিতার তীর্থভূমি।